top of page
ria9481

কার্পাল টানেল সিন্ড্রোমের ব্যাথা কিভাবে চিকিৎসা করা হয় ?







কারপাল টানেল সিন্ড্রোম (CTS) এমন একটি অবস্থা যা ঘটে যখন হাতের মধ্যম স্নায়ু, হাত থেকে তালুতে গিয়ে  কব্জিতে  স্নায়ুর উপর চাপের কারণে হয়। কারপাল টানেল হল একটি সরু পথ যা হাতের তালুর পাশে হাড় এবং লিগামেন্ট দ্বারা ঘিরে থাকে । এই ক্ষেত্রে হাতের মধ্যে অবশ ভাব ,দুর্বলতা,  হাত এবং কব্জিতে ব্যথা অনুভব হতে পারে তার সাথে আঙ্গুলগুলি ফুলে যেতে পারে ।


 কার্পাল টানেল সিন্ড্রোমের লক্ষণগুলি সাধারণত ধীরে ধীরে শুরু হয় এবং যা দেখতে পাওয়া যায় ,সেগুলি হল :


  • অবশ ভাব বা অসাড়তা: হাতের আঙ্গুলে  অসাড়তা লক্ষ্য করা যায় । সাধারণত বুড়ো আঙুল এবং তর্জনী, মধ্যমা বা রিং আঙ্গুল প্রভাবিত হয়। এই আঙ্গুলগুলিতে বৈদ্যুতিক শকের মতো সংবেদন অনুভব করতে পারা যায়

  • সংবেদনস্থান: এই ব্যাথার অনুভূতি হাতের কব্জি থেকে বাহু পর্যন্ত হতে পারে। গাড়ির স্টিয়ারিং ধরা , ফোন বা খবরের কাগজ ধরার সময় এই লক্ষণগুলি প্রায়শই ঘটে । রাতে কব্জি ব্যথার ফলে  ঘুমের অসুবিধে হতে পারে ।

  • দুর্বলতা:হাতের দুর্বলতা অনুভব করা যায় এবং কোনো জিনিস  ধরতে গেলে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে । এটি হাতের অসাড়তা বা বুড়ো আঙুলের  পেশীগুলির দুর্বলতার কারণে হতে পারে, যা মধ্যস্থ নার্ভ দ্বারাও নিয়ন্ত্রিত হয়।

এটি  কব্জিতে এবং মধ্যম  স্নায়ুর উপর অতিরিক্ত চাপের কারণে হয়ে থাকে। এর ফলে ব্যাথার সাথে জ্বালাভাব হয় আর আঙুল ফুলে গিয়ে রক্ত সঞ্চালনে বাধা সৃষ্টি করে। কারপাল টানেল সিন্ড্রোম যাদের মধ্যে দেখা যায় :


  • ডায়াবেটিস রোগীদের

  • থাইরয়েড সমস্যা থাকলে

  • মহিলাদের গর্ভাবস্থায়  বা মেনোপজ এর পর

  • উচ্চ্ রক্তচাপ থাকলে

  • অটোইমিউন ব্যাধি যেমন রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস এ আক্রান্তদের

  • কব্জিতে ফ্র্যাকচার হলে

  • কিছু নির্দিষ্ট পেশার মানুষ দের হতে পারে যেমন পিয়ানো বাদক ,কন্সট্রাকশান ওয়ার্কার ,কিবোর্ড প্রোগ্রামিং ওয়ার্কার ইত্যাদি ।


ডাক্তাররা  কিভাবে কার্পাল টানেল সিন্ড্রোমের ব্যাথা বুঝতে পারেন?


ডাক্তাররা রোগীদের ব্যাথার ইতিহাস, বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষা এবং স্নায়ুর পরীক্ষাগুলির মাধ্যমে  কার্পাল টানেল সিন্ড্রোম নির্ণয় করতে পারেন।বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষার মধ্যে  হাত, কব্জি, কাঁধ এবং ঘাড়ের পর্যবেক্ষণ থাকে যাতে স্নায়ুচাপের অন্য কোনো কারণ পরীক্ষা করা যায়।  হাতের আঙ্গুলের  কোমলতা, ফোলাভাব এবং যেকোনো বিকৃতির জন্য  হাতের কব্জির দিকে নজর দেওয়া হয় । আঙ্গুলের সংবেদনশীলতা  এবং হাতের পেশীগুলির শক্তি পরীক্ষা করা হয় । স্নায়ুর বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা যা স্নায়ুর  প্রবণতার পরিবাহনের গতি পরিমাপ করতে পারে। যদি নার্ভ হাতে চলে যাওয়ার সাথে সাথে স্নায়ুর প্রবণতা স্বাভাবিকের চেয়ে ধীর হয় তবে  কার্পাল টানেল সিন্ড্রোম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ।


কার্পাল টানেল সিন্ড্রোমের চিকিৎসা:


কারপাল টানেল সিন্ড্রোমের চিকিত্সা নির্ভর করে আপনার ব্যথা এবং লক্ষণগুলি কতটা গুরুতর এবং দুর্বলতা আছে কিনা তার উপর।

চিকিৎসা গুলির মধ্যে রয়েছে:

  • হাত এবং কব্জিকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দিতে হবে ,যত বেশি বিশ্রাম পাবে, উপসর্গগুলি থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি।

  • ঠান্ডা কম্প্রেস প্রয়োগ করা:হাতের আঙুল এবং  কব্জিতে একটি বরফের প্যাক দিতে হবে দিনে ৩-৪ বার ১০-১৫ মিনিট ।

  • ট্রিগার ম্যানেজ করা: এই ব্যাথা যদি হাতের বারবার নড়াচড়া থেকে হয়, তাহলে কাজের বিরতি নেওয়ার প্রয়োজন যাতে হাত এবং কব্জির বিশ্রাম হয় ।

  • কব্জির স্প্লিন্ট পরা: এগুলি কব্জিকে একই অবস্থানে রাখে এবং এটিকে বাঁকানো থেকে বাধা দেয়। এগুলি ঘুমের সময়, পাশাপাশি জেগে ওঠার সময়ও পরা যেতে পারে ।

  • ওষুধ : ননস্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ওষুধ, যেমন অ্যাসপিরিন এবং আইবুপ্রোফেন হালকা ব্যথা কমানোর  ওষুধ এবং তার সাথে জ্বালা ভাব আর ফোলাভাব কমাতে পারে ।

  • Injection : যে কোনো রোগের অবস্থার চিকিৎসা, যেমন ডায়াবেটিস বা আর্থ্রাইটিস এর ব্যাথা কমাতে কার্পাল টানেল এলাকায় স্টেরয়েড ইনজেকশন দেওয়া হয় । তার সাথে কর্টিকোস্টেরয়েডেরও নির্দেশ দিতে পারেন। সাধারণত কর্টিকোস্টেরয়েডগুলি সরাসরি কব্জিতে ইনজেকশন হিসাবে দেওয়া হয় ,এছাড়া বোটক্স ইনজেকশন টেন্ডন টেনশন থেকে মুক্তি দিতে পারে।

 

 

 

2 views0 comments

Comments


bottom of page