Samobathi Pain Clinic - 6/Z Umakanta Sen Lane Kolkata 700030
Tel:+91 9830448748
অপারেশান ছাড়াই হাঁটু ব্যথার (অস্টিও আর্থ্রাইটিস) চিকিত্সা
বয়স্ক মানুষদের মধ্যে হাঁটু ব্যথা প্রায় প্রতিটি পরিবারেই দেখতে পাওয়া যায়। এর বিভিন্ন কারণের মধ্যে প্রধান কারণ অস্টিও আর্থ্রাইটিস বা অস্থিসন্ধির ক্ষয়|
আমাদের দেহের জয়েন্টেগুলো নরম এবং মসৃণ আবরণ বা কার্টিলেজ দিয়ে ঢাকা থাকে। এই কার্টিলেজ যখন ক্ষয় হয়ে অমসৃণ আকার ধারণ করে তখন জয়েন্ট নাড়াচাড়ায় ব্যথা অনুভূতহয়, অনেক সময় জয়েন্ট ফুলে যায়। এটি অস্টিও আর্থ্রাইটিস বা হাঁটুর এক প্রকার বাত।
হাঁটুর অস্টিও আর্থ্রাইটিস কেন হয়?
-
বয়সজনিত ক্ষয় : বয়স বাড়ার সাথে সাথে হাড় ক্ষয়ের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। সাধারণত ৪৫ থেকে ৫০ বছর বয়সে এই রোগ বেশি হয়।
-
বেশী ওজন : হাঁটু শরীরের ওজন বহন করে । তাই অতিরিক্ত দৈহিক ওজন হাঁটুতে বেশী চাপ সৃষ্টি করে, তাই হাঁটুর ক্ষয় বেশি হয়।
-
মাংসপেশির দুর্বলতা : দুর্বল মাংসপেশি হাঁটুর সন্ধিকে তার স্বাভাবিক স্থানে ধরে রাখতে পারে না। ফলে ঘর্ষণ বেশি হয়, ক্ষয়ও বেশি হয়।
-
আঘাতজনিত কারণ বা জয়েন্ট ইঞ্জুরি
-
অস্থিসন্ধির তরল পদার্থ বা সাইনোভিয়াল ফ্লুয়িড কমে গেলে : দেহের বড় বড় জয়েন্টের ভেতর এক প্রকার তরল পদার্থ থাকে যা জয়েন্ট নাড়াচাড়া করতে সাহায্য করে। এই তরল পদার্থ কমে গেলে জয়েন্টে ঘর্ষণ বেশি হয়। ফলে ক্ষয়ও বেশি হয়।
-
পেশাজনিত কারণ : যারা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করেন, অতিরিক্ত সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করেন এবং যারা অতিরিক্ত ভার বহন করতে হয় এমন কাজ করেন তাদের হাঁটুর ব্যথা বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
-
তা ছাড়া জেনেটিক বা বংশগত কারণ, জন্মগতভাবে অস্বাভাবিক জয়েন্তেও অস্টিও আর্থ্রাইটিস হতে পারে।
কি ভাবে বুঝবেন যে অস্টিও আর্থ্রাইটিস হয়েছে?
অস্টিও আর্থ্রাইটিস এর উপসর্গ : ১. হাঁটুতে ব্যথা। ২. হাঁটু ফুলে যাওয়া। ৩. হাঁটু গরম অনুভূত হওয়া। ৪. হাঁটু ভাঁজ করতে না পারা বা জয়েন্ট জমে আছে এমন বোধ হওয়া। ৫. জয়েন্টের আকৃতি পরিবর্তন। ৬. কখন কখন হাঁটুর নাড়াচাড়ায় শব্দ হওয়া|
অপারেশান ছাড়াই হাঁটু ব্যথার (অস্টিও আর্থ্রাইটিস) চিকিত্সা কি ভাবে সম্ভব ?
অনেকে মনে করেন যে অপারেশান ছাড়া অস্টিও আর্থ্রাইটিস চিকিত্সা সম্ভব নয় , কিন্তু একথা সত্যি নয় | অসুধ ও ব্যয়াম ছাড়া আধুনিক চিকিত্সা বিজ্ঞানে বেশ কিছু পদ্ধতি যথাসম্ভব সাফল্য এনেছে | তার মধ্যে কয়েকটি হলো-
-
ইন্ট্রা আর্টিকুলার ইঞ্জেকশন : ভিসকো সাপ্লিমেনটেসন
-
কুলড রেডিওফ্রিকোয়েন্সি
ইন্ট্রা আর্টিকুলার ইঞ্জেকশন :
ভিসকো সাপ্লিমেনটেসন কি ?
এই পদ্ধতিতে উচ্চ মলিকিউলার ওয়েট যুক্ত হায়ালুরোনান হাটুতে ইনজেক্ট করে দেওয়া হয় | যা হাটুর স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে | ভিসকো সাপ্লিমেনটেসন এর ফলে ঘর্ষণ জনিত ক্ষয় কমে যায় এবং ব্যথা কম হয়। ভিসকো সাপ্লিমেনটেসন অষ্টিও আর্থরাইটিসের চিকিৎসার জন্য আমেরিকার ইউ. এস. এফ. ডি. এ.(USFDA) দ্বারা স্বীকৃত পদ্ধতি |
এই পদ্ধতিতে চিকিত্সা শুধুমাত্র ইনজেকশনের সাহায্যে করা হয় , এক ইনজেকশন সাধারনত একেবারেই যন্ত্রনাদায়ক নয় , বহির্বিভাগেই এই চিকিত্সা সম্ভব , সাধারণত হসপিটালে ভর্তি থাকতে হয় না |
ভিসকো সাপ্লিমেনটেসন এর আগে অসমান কারটিলেজ এর জন্য ব্যথা
ভিসকো সাপ্লিমেনটেসন এর পরে
জেল লেয়ার ঘর্ষণ জনিত ক্ষয় এবং ব্যথা কমিয়ে দেয়
প্লেটলেট রিচ প্লাজমা থেরাপি
প্লেটলেট রিচ প্লাজমা হল আমাদের শরীরের রক্তের একটা অংশ, যেখানে প্রচুর পরিমাণে প্লেটলেট বা অণুচক্রিকা ও গ্রোথ ফ্যাক্টর থাকে। রোগীর শরীর থেকে রক্ত নেওয়া হয় এবং এই গ্রোথ ফ্যাক্টরগুলি যে অংশে থাকে, সেই প্লেটলেট অংশ টুকুকে আলাদা করে নেওয়া হয় বিশেষ ফিলটার এবং সেন্ট্রিফিউগেশন পদ্ধতি দ্বারা। তারপর বিশেষ পদ্ধতিতে এটি হাঁটুর নির্দিষ্ট অংশে ইনজেকশন দ্বারা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।। এই পদ্ধতির মাধ্যমে রোগীর শরীরের হিলিং পাওয়ার বা ক্ষত সরিয়ে তোলার ক্ষমতার কার্যকরিতা বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়া হয় এবং এটি হাঁটুর ক্ষয় রোধ করে এবং ক্ষয়প্রাপ্ত অংশটুকুকে সারিয়ে তোলে। এতে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সম্ভবনা খুব কম ।সাধারণত হসপিটালে ভর্তি থাকতে হয় না| সারা বিশ্বে এই অত্যাধুনিক পদ্ধতি এখন বেশ জনপ্রিয়।
কুলড রেডিওফ্রিকোয়েন্সি
এটি অত্যাধুনিক পদ্ধতি, কুলড রেডিওফ্রিকোয়েন্সি এর সাহায্যে হাঁটুর চারপাশের ব্যথা বহনকারী নার্ভ এ ব্যথার সিগন্যাল প্রবাহ থামিয়ে/বন্ধ করে দেয়। যার ফলে হাঁটুর ব্যথা কম হয় | এই পদ্ধতি টি সাধারনত মাধ্যম থেকে তীব্র হাঁটুর ব্যথায় ব্যবহার করা হয় | কুলড রেডিওফ্রিকোয়েন্সি অষ্টিও আর্থরাইটিসের চিকিৎসার জন্ আমেরিকার য ইউ এস এফ ডি এ দ্বারা অনুমোদিত হয়েছে।